বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, বছরের পর বছর আন্দোলন, সংগ্রাম, ত্যাগ-বঞ্চনা সহ্য করে বিএনপি জনগণের যে আস্থা আর ভালোবাসা অর্জন করেছে, দলের কিছু বিপথগামীদের হঠকারিতায় সেই আস্থা আর প্রত্যাশার জায়গা ক্ষতিগ্রস্থ হবে, সেটা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।

আজ সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে খুলনা বিভাগের সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। তারেক রহমান বলেছেন, আপনারা দলের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারীদের চিহ্নিত করুন, প্রতিরোধ করুন। দল তাদের শুধু বহিস্কারের অঙ্গীকারই নয়, তাদের বিরুদ্ধে আইন ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দিচ্ছে।

তিনি আবেগের সঙ্গে জানান, যে বাড়িতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাস করেছেন, যে বাড়ির প্রতিটি ইঞ্চিতে তার ও তার ভাইয়ের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি জড়িয়ে আছে, যে বাড়ি তার মায়ের সংসারের সূচনা আর বৈধব্যের বেদনার স্বাক্ষী; সেই বাড়ি থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে কতটা অসম্মানজনক ও অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে সেটা দেশবাসী দেখেছে। বিনা চিকিৎসায় তার একমাত্র ভাইকে যেমন নিদারুণ অবহেলায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে, ঠিক তেমনি দলের তৃণমূলের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়ে, পরিবার পরিজন বিসর্জন দিয়ে, ব্যবসা চাকরি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে।

তৃণমূলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, তারা যেমন অতীতের মতো প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করেন না, তেমনি তিনি এবং দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়াও জানেন যে, দেশের মানুষও গত ১৭ বছর বাংলাদেশ নামের এক বৃহত্তর কারাগারে বন্দী জীবন-যাপন করেছেন। সুতরাং আজ হিংসা নয় বরং দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরনের মাধ্যমে অতীতের সকল অন্যায়ের জবাব দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

তিনি দলের তৃণমূলের ওপর অগাধ আস্থা পুনব্যক্ত করে এক এগারোর দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, দলের সকল সংকটকালে তৃণমূলই ছিল বিএনপির শক্তি। এরা শত প্রলোভন আর নির্যাতন উপেক্ষা করে ইস্পাত কঠিন ঐক্য দিয়ে দলকে ধরে রেখেছে। এসময় তিনি জানান, তৃণমূল সঙ্গে থাকলে দল যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে যেমন সক্ষম হবে, তেমনি তার পক্ষেও অনেক সহজ হবে দল পরিচালনা করা।

তিনি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ ও আগামীর আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা কর্মসূচির মূল বিষয়গুলো তুলে ধরে এই বার্তা দেশের প্রান্তিক  সকল মানুষের কাছে পৌঁছানোর নির্দেশও দেন। বলেন, স্বৈরাচারের পতন শুধুমাত্র প্রাথমিক বিজয়, সামনে রয়েছে প্রকৃত পরীক্ষ। ফলে আত্মতুষ্টি আর সকল শিথিলতা কাটিয়ে আগামীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশের আপামর জনগণের দলের প্রতি সমর্থন আর ভালোবাসার প্রতিদান দিতে হবে।