চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর সাকিব হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ২ নং ও ৩ নং সহ চারজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
নিহত ভিকটিম মোঃ সাকিব (১৮) চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানাধীন কালা মিয়া বাজার এলাকার ফিরোজা বেগমের ছেলে। ভিকটিমের পরিবারের সাথে প্রতিবেশী মোঃ করিম এবং তার পরিবারের পূর্ব থেকেই বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত শত্রুতার জের ধরে গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ রাত ১১.৩০ মিনিটে আসামি মোঃ করিম ভিকটিম মোঃ সাকিবকে কৌশলে বাসা থেকে ডেকে পার্শ্ববর্তী রমজান আলীর বাড়ির পাশে আমিনের দোকানের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা আসামির আনুমানিক ২০ জন অপরাপর সহযোগী ভিকটিম সাকিবের ওপর দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র এবং লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে তাকে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় তার আর্তচিৎকারে ভিকটিমের মা সহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা তাদেরকেও কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। এ সময় তাদের আর্তচিৎকারে ভিকটিমের অপর বোন এবং স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় এবং চিকিৎসারত অবস্থায় গত ০৬ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ভোর ০৫.৪০ ঘটিকায় ভিকটিম সাকিব হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে।
উক্ত নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত ভিকটিমের মা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানায় ১৫ জন এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ১২/২৩৩, তারিখ- ২১ আগস্ট ২০২৪ ইং, ধারা- ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/১১৪/৩০২/৫০৬/৩৪, দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ২নং ও ৩নং আসামি চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়োজিদ বোস্তামী থানাধীন টেকনিক্যাল মোড় এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক গত ০৬ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে দুপুর ০১.৫০ মিনিটর বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এজাহারনামীয় ২ নং আসামি ১। মোঃ বাদশা (৩৬), পিতা- আব্দুল নূর, ২। মোঃ তৈয়ব (৪০), পিতা- মৃত কবির আহমদ’দের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই তারিখে ০৩.১৫ মুনিটে চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন আনন্দবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আভিযানিক দলটি মামলার এজাহারনামীয় ১২ নং আসামি ৩। মোঃ নাঈম(২৭), পিতা- মোঃ মহিউদ্দিন’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে আভিযানিক দলটি কোতোয়ালি থানাধীন লালদীঘির মোড় এলাকায় ০৬.১৫ মিনিটে অভিযান পরিচালনা করে এজাহারনামীয় ৮নং আসামি ৪। মোঃ ইমু(২৮), পিতা- আবুল বশর,
সর্বসাং- কালামিয়া বাজার, আব্দুল লতিফ হাটখোলা, থানা- বাকলিয়া, চট্টগ্রাম মহানগরী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি হওয়ার কথা এবং উক্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাকে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।