ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রসহ বিভিন্ন রাজ্যে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। এই পরিস্থিতি উত্তেজনার দিকে চলে গেছে। ভারতের কৃষকরা অভিযোগ করছেন, তারা পেঁয়াজ ও আলু মাত্র আড়াই থেকে ৩ প্রতি কেজি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, যার ফলে তাদের উৎপাদন খরচও উঠছে না। এই পরিস্থিতিতে কৃষকরা রাস্তায় পেঁয়াজ ও আলু ফেলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২ ডিসেম্বর থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আলু রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে, কারণ রাজ্যের অভ্যন্তরীণ সংকটে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের কৃষকরা এই সিদ্ধান্তের পর অভিযোগ করেছেন, তারা উৎপাদিত পেঁয়াজ ও আলুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না এবং এভাবে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
এই উত্তেজনার পেছনে মিডিয়ার একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। বিশেষত, রিপাবলিক বাংলা টিভির সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা প্রচারণা চালানোর জন্য অভিযুক্ত হচ্ছেন। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা চলছে এবং ভারতীয় পণ্য আমদানি বন্ধ হলে বাংলাদেশে খাদ্য সংকট দেখা দেবে। কৃষকরা এই ধরনের ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য ময়ূখ রঞ্জনকে দায়ী করেছেন এবং তার বাড়ি ঘেরাও করে, তার সামনে পেঁয়াজ ও আলু ফেলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।
বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে পেঁয়াজ ও আলু আমদানির জন্য ভারতের উপর নির্ভর না করে বিকল্প উৎসের সন্ধান করছে। বাংলাদেশ এখন পাকিস্তান ও চিন থেকে পণ্য আমদানি করছে, যার ফলে দেশটির বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে। এদিকে, ভারতীয় কৃষকদের মতে, ময়ূখ রঞ্জনের মিথ্যা প্রচারণার কারণে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক খারাপ হয়েছে এবং রফতানি বন্ধ হয়ে গেছে।
ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতি ইতোমধ্যেই কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন, আর এই রফতানি বন্ধের ফলে কৃষকদের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। কিছু কৃষক পণ্য বিক্রি করতে না পেরে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছেন, এমন খবরও পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দুর্দশার জন্য সরকারের নীতিগত ব্যর্থতা এবং মিডিয়ার অপপ্রচার দায়ী।
এই সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে, কারণ তারা বিকল্প উৎস থেকে পণ্য আমদানির ব্যবস্থা করেছে এবং এর ফলে তাদের বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে।
সূত্র: বিনোদোন ৬৯ ডটকম