ইতোমধ্যেই বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক, বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খান পুরস্কৃতদের পেছনে দাঁড় করিয়ে রাখা নিয়ে সমালোচনা করেছেন । তিনি বলেছেন, ‘বাংলা একাডেমি যদি মানুষকে সম্মান প্রদর্শন করতে না জানে আমরা তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করব নাকি? তাদের আদব-কায়দা যদি না থাকে আমরা কী করব? লোকজন বলছে, আপনি পুরস্কার নিলেন কেন? আরে..পুরস্কার নেওয়ার পরেই তো বেইজ্জতটা করছে।’
গতকাল রোববার ( ২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত উৎসবে তিনি আরও বলেন, আমরা এমন দুর্ভাগা জাতি, এটি কখনও শান্ত হয় না। কারণ এখানে কখনও অত্যাচারিতের আর্তনাদ বন্ধ হয় না। আমরা শান্ত হতে পারি না। এখানে বারবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে হয়। স্বাধীনতার পরে আমরা শান্ত হতে চেয়েছি তবে দুই বছরের মাথায় রফিক আজাদকে বলতে হলো- ‘ভাত দে হারামজাদা নইলে মানচিত্র খাব’। রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহকে বলতে হলো ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন’।
এরপরই টনক নড়েছে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফেসবুকে একটি পোস্ট লেখে জানান, পুরস্কৃতদের পেছনে দাঁড় করিয়ে রাখা আর হবে না। নিচে তার পোস্ট তুলে ধরা হলো :
১ঃ পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণীজনদের গ্রুপ ফটো সেশন নিয়ে গতকাল থেকে নানারকম আলোচনা হচ্ছে। আপনারা সবাই জানেন সরকার বা পুরস্কার প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সাথে স্টেজেই পুরস্কারপ্রাপ্তদের গ্রুপ ফটো সেশনের একটা রেয়াজ চালু আছে যেটা নিয়ে আগে কখনো কোনো অভিযোগ ঐরকম ভাবে শোনা যায় নাই। কিন্তু আমরাতো সংস্কার করতে আসা সরকার। আমাদের কেনো রেয়াজ মানতে হবে? আজকে আমাদের মন্ত্রণালয়ে এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি গ্রুপ ফটো সেশনের এই রেয়াজ এ বছরের একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠান থেকে আর রাখা হবে না। গ্রুপ ফটো সেশন কোথায় কিভাবে হবে এটা নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
২ঃছয়মাস হইলো আমরা একটা খুনী-সাইকোপ্যাথের হাত থেকে মুক্তি পাইছি। জাস্ট ছয় মাস!
যে খুনী শত শত মানুষকে গুম করিয়েছে, হাজার হাজার বিরোধী মতের মানুষকে খুন করিয়েছে, জুলাইতে একটা নারকীয় গণহত্যা চালিয়েছে, ইলিয়াস আলিকে গুমের পর হত্যা করে তার মেয়েকে জড়িয়ে ধরে নাটক করেছে, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করিয়ে মানুষ মেরেছে, যে এখনো বিচার প্রক্রিয়া পার হওয়াতো দুরের কথা সামান্য অনুশোচনার ভেতর দিয়েও যায় নাই, যে এখনো আরও খুনের হুমকি দিচ্ছে- তার সাথে শিষ্টাচার?
হিটলারের সাথে শিষ্টাচার? আর ইউ সিরিয়াস? সালাম দিয়ে বলতে হবে, “প্রিয় খুনী, আপনি আমার প্রণাম গ্রহন করুন”?