রাজধানীর রামপুরা বনশ্রীতে ফরাজী হাসপাতালে ৯ মাসের ছেলে আনাস নামে এক শিশুকে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। আনাজ বনশ্রীর দক্ষিন বনশ্রীর বাসিন্দা সাইফুর রহমানের একমাত্র সন্তান। গত ২ ফেব্রুয়ারী রবিবার বাসায় হটাৎ বমি করলে তাকে আনুমানিক দুপুর ২ টার দিকে ফরাজি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আনাজ এর বাবা সাইফুল রহমান জানান, বিষয়টা ছিলো ছোট, বাচ্চার হঠাৎ বমি দেখে আমি ভয় পেয়ে ফরাজি হাসপাতালে ইমারজেন্সিতে নিয়ে যাই, ওনারা কোনো কিছু না দেখেই আমাকে বল্লো ভর্তি করাতে হবে,যেহেতু আমার প্রথম বাচ্চা আর ৯ মাস বয় আমি কোনো কিছু না ভেবেই বল্লাম যা লাগে করেন। এরপর ভর্তির ফরমালিটিস শেষে রুমে যাওয়ার পর ইনজেকশন দেওয়ার জন্য কেনলা সেট করে, ইনজেকশন দেয় দুই তিনটা, প্রায় ১ ঘন্টা পরে আমি আমার বাচ্চার হাতে দিকে তাকিয়ে দেখি হাত ফুলে গেছে, নার্সকে দেখানোর পরে বললো কিছু হয় নাই ঠিক হয়ে যাবে! এরপর ডাক্তার আসে বাচ্চাকে দেখে এরপর বল্লো ক্যানোলা ঠিক মত লাগানো হয়নাই এটা ঠিক করেন। এরপর নার্স আমাকে বলল ওটিতে নিতে হবে ক্যানোলা ঠিক মত করানোর জন্য আমি ওটির কথা শুনে প্রথমে রাজি হয়নি পরে আমার একটা বন্ধু এসে আমাকে রাজি করালো এবং বললো আল্লাহ ভরসা কিছু হবে না ১০ মিনিট সময় লাগবে নার্সরা বলতেছিলো। তারপর রাজি হয়ে বাচ্চাকে ক্যানোলা করার জন্য দিয়ে ওটির সামনে দাঁড়িয়ে থাকি ১০ মিনিট গিয়ে ২০, এরপর ও বাহির করে না? যখন ৩০ মিনিট হয়ে যায় তখন তো ভাই আর মন মানে না চিল্লা চিল্লি শুরু করে দেই ওনারা তাও বাহির করে না? ৫-৭ মিনিট পরে বাচ্চাকে যখন আনে দেখি ক্যানোলা করতে পারে নাই? বাচ্চার হাতে পায়ে ইনজেকশনের দাগ তাহলে ওনারা ৩০-৩৫ মিনিট কি করলো? বাসায় এসে দেখি বাচ্চার গাল ফুলা হাত-পায়ে সব জায়গায়। হসপিটাল থেকে কোনো ট্রিটমেন্ট ছাড়াই বাসায় আসি, কিন্তু বাচ্চা বাসায় আশার পর ওর মায়ের বুকের দুধ খেয়েই আসতে আসতে স্বাভাবিক হয়েছে। তাহলে কথা হচ্ছে আমরা না হয় বাচ্চার কথা চিন্তা করে অল্পতে ভয় পেয়ে হসপিটালে গেলাম, ওনারা জিনিস টাকে এত বড় করে দেখিয়ে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করে ভর্তি কেন নিলো চাইলে প্রাথমিক কোনো ট্রিটমেন্ট দিয়ে বাচ্চাকে ভর্তি না করিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিতে পারতো কিন্তু না তাদের বিল বানাতে হবে তাই বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করতেছিল যাক আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়েছে, তবে এগুলা সকলের জানা উচিৎ আমার সাথে ঘটেছে কাল অন্য আরও কয়েকজনের সাথে ঘটবে, পরে হাসপাতাল থেকে ফোন করে আমাকে যাওয়ার জন্য বলে বলে আমি আর সময় সুযোগের অভাবে যাইনি আর যেয়েই কি হবে আমাকে এটাই বলবে যা এর আগেও ওরা করেছে।
সাইফুল রহমান আরও জানান, আমি পুরো ঘটনা নিয়ে ফেজবুকে একটা পোস্ট করেছিলাম সেটা করার পরে বিভিন্ন ভাবে ফেজবুক গ্রুপের এডমিনদের মামলার হুমকি ঢামকি দিয়েছে, তাই আমি ভয়ে এতোদিন মুখ বন্ধ করেছিলাম কিন্তু যখন প্রায় দুইশর ও উপরে মানুষের কমেন্ট দেখলাম তারাও কোনো না কোনো ভাবে ভুক্তভোগী আপনি পোস্ট টাতে গেলেই দেখতে পারবেন, সর্বশেষ তিনি বলেন, আমি এর সঠিক বিচার চাই যাতে করে আগামীতে আমার সন্তানের মত কেউ তাদের প্ররোচনায় পড়ে হেনস্তার শিকার না হয়।
ফেজবুকে পোস্টের কমেন্টে দেখা যায়,
সাদমান ইসলাম সাদি লিখেন, তারা আমার সাথেও একই আচরণ করেছিল…তাদের নার্স এবং মেডিকেল সহকারীরা খুবই অপেশাদার এবং অভদ্র..তারা ক্যানোলা সেট করার মতো মৌলিক জিনিসও জানে না..আমার স্ত্রীর সাথেও আমার একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল..প্রায় এক মাস ধরে তার হাত ফুলে ছিল এবং তাদের নার্সরা খুব অভদ্র ছিল।
জান্নাতুল ফেরদৌস তন্নী লিখেন,আমার আব্বু হাসপাতাল এ টনিক অপারেশন কোরে চিলো তখন নার্স আসে আমার বলে আকতা ড্রপ ছোলে ২ ফোটা দেয়ার জন্য আমি চিন্তা করলাম অপারেশন করছে গোলায় ড্রপ কেনো চোখে দিতে বলবে পরে আমি অন্য নার্স কে জিজ্ঞাসা করলাম উনি বললো এটা নাকের ড্রপ চিন্তা করেন নাকের ড্রপ গলায় দিয়ে বলে।
শাফাত বিন সালাম লিখেন,আমি বেশ কয়েক যায়গা থেকে শুনছি ওরা এই অসৎ আচরণ করে, এমনকি পরিচালক নিজ বিএমডিসি নিবন্ধিত না হওয়ার পরেও নামের আগে ডাক্তার বসাতে পছন্দ (ফিজিওথেরাপিস্ট) জেটা সম্ভবত ফৌজদারি অপরাধ।
সাদ বিন ইফতেশাম লিখেন,ফরাজী একটা হাসপাতাল হইলো! একতা বস্তি যায়গা ওটা, জরুরী তে কাজ করায় যত্তসব পিয়ন দের দিয়ে.. আমি নিজে একদিন জরুরী তে গিয়ে দেখি আরেকজন রোগী এর হাত এর ব্যান্ডেজ কাঁটতেও ওখানের লোক এর হাত কাপতেসে..পরে ওখান থেকে বেটার লাইফ চলে গিয়েছি. সবাই ফরাজী নামক বস্তি টাকে এড়িয়ে যাবেন.. ওটা কোন হাসপাতালই না
সায়লা হাসান রুমা লিখেন,এটা একটা ফালতু হসপিটাল ২০১৭ সালে অনেক বড় শিক্ষা পেয়েছি।
নাফিজা আনজুম নুহা লিখেন আমার আব্বু গত বছর নভেম্বর হঠাৎ অসুস্থ হলে ফরাজী হসপিটালে ভর্তি করাই ট্রিটমেন্টের জন্য ডক্টর ইনজেকশন দিতে বলে পরে অনেকগুলো ইঞ্জেকশন পুশ করে তারপর থেকে আব্বুর অবস্থা খারাপ হইতে থাকে এবার বলতেছিলাম আব্বু ইনজেকশন দেওয়ার পর থেকে আরও খারাপ অবস্থা হইতেছে নার্স বলে ডাক্তার আসতেছে ইটিসি বলে, ডাক্তার এসে আব্বুকে দেখে তাকে নিয়ে বলে ওনার কন্ডিশন অনেক খারাপ এবং ইমারজেন্সি আইসিইউতে শিফট করতে হবে আমরা বললাম তাহলে শিফট করেন তাদের কোন আইসিও নাকি খালি নাই তখন রাত দুইটায় আমরা আব্বুকে নিয়ে অন্য হসপিটালে আইসিইউতে এডমিট করি এ হচ্ছে ফরাজী হসপিটাল এর অবস্থা
নুসরাত নাকে একজনের স্ক্রিন শটে দেখা যায়, ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করলে, গ্রুপের এডমিনকে ফরাজি হসপিটাল থেকে ফোন করে সাইবার ক্রাইম মামলা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে।
অভিযোগের বিষয় ফরাজি হাসপাতালের উপ-মহাব্যবস্থাপক পিয়াল আহমেদ রুবেল জানান, আমরা তো জরুরী বিভাগে বা ওয়ার্ডে কি হচ্ছে এইটা দেখতে পারিনা কিন্তু আমরা বিষয়টি অনেক পরে অবগত হয়েছি এবং হওয়ার সাথে সাথে রোগীর বাবার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেছি, উনাকে হাসপাতালে আসার জন্য অনুরোধ করেছি। উনার যদি কোন অভিযোগ থাকে আমরা অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ফেজবুকে পোস্টের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনি আমাদের ঊর্ধ্বতম কর্তৃপক্ষ কাউকে জানান নাই ওনার তো