• শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:৫০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
আগুনে দগ্ধ শিশু ফাতেমার দায়িত্ব নিলেন রবিউল ইসলাম নয়ন মহম্মদপুরে প্রতিবন্ধীদের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ ও ইমামদের সাথে মতবিনিময় সভা বাংলাদেশ সংস্কার প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সমর্থন জাতিসংঘ মহাসচিবের সেই রাতের ঘটনা কেঁদে কেঁদে জানালেন মাগুরার মৃত শিশুটির মা কুমিল্লায় জাতীয় ভিটামিন এ-প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে সাংবাদিকদের নিয়ে ওরিয়েন্টেশন ঢাবিতে উসকানির মাস্টারমাইন্ড প্রায় দুইশ শিক্ষক-ছাত্রলীগ নেতা দীঘিনালায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে আবারও বন্ধ করলেন দুই ইটভাটা স্থায়ীভাবে! হাসিনা আমলের ৫৬০ মডেল মসজিদে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে: প্রেস সচিব দেশবাসীকে কাঁদিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত মাগুরার শিশুটি কুমিল্লায় বাঁচার জন্য লড়াই করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও মানবাধিকার কর্মী এবং স্থানীয় সাংবাদিক: মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্র

কারসাজি করে বাড়ানো হয়েছে ডিমের দাম

অনলাইন ডেস্ক / / / ৩৮ Time View
Update : রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪

লাগামহীন হয়ে ওঠা নিত্যপণ্যের বাজারে নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টির অন্যতম উৎস ডিম। গত কয়েক দিনে ডিমের দামও হু হু করে বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে দরিদ্র মানুষের জীবনে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির প্রতি ডজন ডিমের দাম মানভেদে খুচরায় ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম নিয়ে ক্রেতাদের ক্ষোভ-অসন্তোষ থাকলেও তাতে পাত্তাই দিচ্ছেন না বিক্রেতারা। কোনো কারণ ছাড়াই কারসাজি করে ব্যবসায়ীরা ডিমের দাম বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তারা।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে একটি ডিমের দাম পৌঁছেছে ১৫ টাকায়। এমন অস্থিরতার নেপথ্যে বহুজাতিক কোম্পানি এবং রাজধানীর তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতিকে দায়ী করেছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। একইসঙ্গে গত ২০ দিনে অযৌক্তিকভাবে ডিম ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে অসাধু চক্র ২৮০ কোটি টাকা লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।

বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত গরমের জন্য খামারে ডিমের উৎপাদন কমে গেছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কমেছে। আর সরবরাহ কমায় ডিমের দাম বেড়েছে। কম দামে আনতে পারলে ভোক্তাদের কম দামে ডিম দিতে পারব। তবে এ বছর মূল্যবৃদ্ধির হার অস্বাভাবিক। এভাবে দাম বাড়ানো যুক্তিঙ্গত নয়। কোনো কিছুর দাম বাড়াতে হলে সুনির্দিষ্ট কারণ থাকতে হবে। মূলত সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (০৫ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ থেকে ১৭১ টাকা দরে। সে হিসাবে প্রতি হালি ডিমের দাম পড়ে ৫৬-৫৭ টাকা। আর সেই ডিম খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা ডজন। খুচরা বাজারে প্রতি হালি ডিম ৬০ টাকা। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে প্রতি ডজন ডিমের দাম প্রায় ৩৭ টাকা বেশি। অন্যদিকে ফার্মের মুরগির সাদা ডিমের ডজনও অধিকাংশ বাজারে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও অবশ্য ১০ টাকা কমেও পাওয়া যাচ্ছে।

সুপারশপগুলোতে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায়। প্রতি হালি ৬১.৬৬ টাকা থেকে  ৬৩.৩৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ কয়েকদিন আগেও খুচরা বাজারে মুরগির ডিমের হালি বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা। অন্যদিকে হাঁসের ডিমের ডজন পাইকারিতে ১৯৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি ৬৫ টাকা। খুচরায় প্রতি ডজন ২১০ টাকা। হালি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়।

বাজারে ডিমের দাম অনেক দিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। গত জুলাই মাসের অধিকাংশ দিনে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। আগস্টেও দাম মোটামুটি এরকমই ছিল। তবে সেপ্টেম্বর মাসে ডিমের দাম বাড়তে থাকে। মাসের শেষে এসে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। চলতি মাসে সেই ডিমের দাম ১৮০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। পণ্য বিক্রয়কারী সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত এক বছরে ডিমের দাম ১৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর ফার্মের মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির ডিমের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দেয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। তাতে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৪২ টাকায় বেঁধে দেওয়া হয়। এখন সরকারের নির্ধারিত যৌক্তিক মূল্যের চেয়েও ডজনে ৩৮ টাকা বেশি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ব্যাপক ক্ষোভের কথা জানা যায়। তাদের দাবি, ডিমের বাজারে এখনো শক্ত একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে। আওয়ামী লীগের পতন হলেও বর্তমান সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সরকার দাম নির্ধারণের ১৫ দিন চলে গেলেও তা কার্যকর হয়নি।

রিকশাচালক মো. আব্দুল নামে আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের মতো যারা নিয়মিত মাছ-মাংস খেতে পারি না, তাদের জন্য ডিমই ছিল ভরসা। অভাবের সংসারে ডিম সবচেয়ে ভালো খাবার। সবার পছন্দ, কম দাম, পোষায় বেশি। ডিম ছিল বলে একবেলা ঝোল-ভাত জোটে। এখন দেখি দিন দিন ডিমের দামও বাড়ছে। এগুলো দেখার কেউ নাই!

রায়সাহেব বাজারে ৩০ বছর ধরে ডিমের ব্যবসা করেন সোহরাব হোসেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ডিমের দাম বাড়তি। ডিমের এত দাম এর আগে কখনো দেখিনি। মূলত বন্যার পানিতে অনেক খামার নষ্ট হয়েছে, গত কয়েক দিনের গরমে শত শত মুরগি মরে খামার খালি হয়ে যাচ্ছে। মুরগির খাবারের দাম বেশি, মুরগি পালন করে পোষায় না দেখে অনেক খামারি পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। এর ফলে দাম বেড়ে যাচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বেচাবিক্রি কমে গেছে। আমরা পাইকারি প্রতি হালি ডিম ৫৭ টাকায় কিনে খুচরা বাজারে ৬০ টাকায় বিক্রি করি। সে হিসাবে প্রতি ডজন ডিমের দাম পরে ১৮০ টাকা। আমরা ১০০ ডিমে ৭৫ টাকা লাভ করি। শুধু মুরগির ডিমের দামই বেড়েছে। হাঁসের ডিমের দাম আগের মতো ৭০ টাকা হালি বিক্রি করছি।

তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহ আগে প্রতি পিস ১৩ টাকা হিসাবে ১০০ ডিম ১৩০০ টাকায় কিনেছি। বর্তমানে প্রতি পিস ডিম ১৪.২৫ টাকা হিসেবে ১০০ ডিম কেনা পরে ১৪২৫ টাকা। খুচরা বাজারে এক সপ্তাহ আগে প্রতি পিস ডিম ১৩.৭৫ টাকা করে ১০০ ডিম ১৩৭৫ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন প্রতি পিস ডিম ১৫ টাকা করে ১০০ ডিম ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে শতকরা সাত থেকে ৮টি ডিম পচা বা ভাঙা পড়ে। লেবার খরচ হিসাব করলে আমরা কয় টাকা লাভ করি দেখেন!

সুত্রাপুর বাজারের ডিম ব্যবসায়ী সুমন বেপারী বাংলানিউজকে বলেন, এখন ডিমের দাম সবোর্চ্চ। জীবনে কখনো এত দামে ডিম বিক্রি করি নাই। বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি হালি ফার্মের মুরগির ডিম লালটা বিক্রি করছি ছোট হলে ৫৭ টাকা আর বড় হলে ৫৮ টাকা। আর হাঁসের ডিম প্রতি হালি ৭০ টাকা। কক মুরগির ডিম প্রতি হালি ৮৫ টাকা। গত সপ্তাহেও হালিতে ৫ টাকা কম ছিল ডিমের দাম। আমরা আড়ৎ থেকে ডিম আনি। এখানে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করি। সেখানে কম দাম পেলে আমরা কম দামে বিক্রি করি। বেশি দাম পেলে বেশি দামে বিক্রি করি। ডিমের দাম কেন বাড়ছে, সেটা বলতে পারব না। আড়তে জিজ্ঞেস করলে বলে, সরবরাহ কমেছে। আসলে কি সরবরাহ কমেছে?

বাজারে ডিমের সংকট নিয়ে ক্ষুদ্র খামারিরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে কোনো সংকট নেই। বরং করপোরেট প্রতিষ্ঠান এবং তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন। এ বিষয় বাংলাদেশ এগ প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাহের আহমেদ সিদ্দিকী বাংলানিউজকে বলেন, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির পর অতিরিক্ত গরম পড়ায় ডিমের উৎপাদন কমেছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কমে ডিমের দাম বেড়েছে।

গতকাল এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেছেন, দেশে ডিমের কোনো সংকট নেই। বন্যার কারণে কিছু অঞ্চলে উৎপাদন কমলেও অন্যান্য স্থানে উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে। কর্পোরেট ও তেজগাঁওয়ের পাইকাররা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন। এ ছাড়া ডিম ও মুরগির দাম বাড়ার প্রধান কারণ মুরগির খাবারের দাম কয়েক দফা বৃদ্ধি পাওয়া। সিন্ডিকেট ধরে আইনের আওতায় আনলে বাজার স্বাভাবিক হবে এবং ক্ষুদ্র খামারিরা দাম পাবেন। এতে করে জনগণও কম দামে খেতে পারবে।

তিনি বলেন, সারা দেশে ডিমের বাজারে অস্থিরতা চলছে। যার প্রেক্ষিতে ডিম-মুরগির দামও নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কোনো প্রান্তিক খামারিকে ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণের ওয়ার্কিং গ্রুপ কমিটিতে রাখেনি। তারা শুধু কর্পোরেট গ্রুপদের পরামর্শে দাম নির্ধারণ করেছে। যার ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর জন্য খাবার ও মুরগির বাচ্চার উৎপাদনকারী কোম্পানি, তাদের অ্যাসোসিয়েশন এবং তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতিসহ আরও অনেকের শক্তিশালী সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে।

পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরও বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ দশমিক ২৯ টাকা। সে অনুযায়ী ১২ থেকে সাড়ে ১২ টাকা যদি ভোক্তা পর্যায়ের দাম থাকে তবে সেটি যৌক্তিক। কিন্তু সেই ডিমের দাম পৌঁছেছে ১৫ টাকায়। এমন অবস্থায় ডিম আর মুরগির বাজারে স্বস্তি রাখতে পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেট ভেঙে ডিম-মুরগির উৎপাদন খরচ কমাতে পারলে শিগগিরই বাজার সহনীয় পর্যায়ে আসবে।

বিবৃতিতে ডিমের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের ভূমিকার ব্যাপারে বলা হয়, তারা প্রথমে খামার থেকে ডিম সংগ্রহ করে। পরে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় রাতে ডিম পাঠানো হয়। এরপর সকালে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি ফজরের নামাজের পর দাম নির্ধারণ করে সব জায়গায় মোবাইল এসএমএস ও ফেসবুকের মাধ্যমে দাম ছাড়িয়ে দেয়। এরপর সারা দেশে এই দাম বাস্তবায়ন করা হয়।

এখানে প্রতিদিন ১০০ ডিমে ১০-২০ টাকা কমিয়ে ৭ টাকা প্রতি পিসে দাম নামিয়ে আনা হয়। আবার একই নিয়মে ডিমের দাম বাড়িয়ে ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এই সিন্ডিকেট দাম কমিয়ে ডিম কিনে ৫ থেকে ৭ দিন সংরক্ষণ করে রাখে। এরপর হঠাৎ দাম বাড়িয়ে নিজেরা কম দামে কেনা ডিম বেশি দামে বিক্রি করে দ্বিগুণ তিনগুণ লাভ করে। এতে করে, সারা দেশের ডিম ব্যবসায়ীরা লাভবান হয় আর উৎপাদক ও ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার অভিযোগ করেন, মুরগির খাবার ও বাচ্চার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে কর্পোরেট কোম্পানি। তারা এতই শক্তিশালী যে, সরকার খাবার ও মুরগির বাচ্চার দাম নির্ধারণ না করে উল্টো উৎপাদকের ওপর দাম চাপিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে কর্পোরেট গ্রুপদের সিন্ডিকেট করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণ করা হয়। সেখানে বলা হয় উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১০ দশমিক ৫৮ টাকায় বিক্রি করতে পারবে, যা ভোক্তা পর্যায়ে ১২ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু যাদের সাথে নিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, তারা কেউ সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করেননি।

তিনি বলেন করেন, প্রতিটি কর্পোরেট কোম্পানি তাদের ডিম উৎপাদক পর্যায়ে ১১ দশমিক ১ টাকা বিক্রির কথা স্বীকার করলেও তারা প্রতারণার মাধ্যমে প্রতিটি ডিম বিক্রি করেছেন সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৮০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৫০ টাকা পর্যন্ত। ফলে এখন খুচরা বাজারে এসব ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪-১৫ টাকায়। প্রতিটি দিমে ২ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন ৪ কোটি ডিমে ৮ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করা হয়েছে। আর গত ২০ দিনে ১৬০ কোটি টাকা ভোক্তাদের পকেট থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সুমন হাওলাদার বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করেন, প্রতিটি মুরগির বাচ্চা ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা। অথচ ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে একই বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫৬ টাকায়। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে গত ২০ দিনে প্রান্তিক খামারিদের কাছ থেকে ১২০ কোটি টাকা কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত মুনাফা করেছে।

এসব সিন্ডিকেটের পেছনে সরকারের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং দেশের বিভিন্ন কর্পোরেট কোম্পানির হাত রয়েছে বলেও সুমন হাওলাদার অভিযোগ করেছেন। একইসাথে সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো তদারকির মাধ্যমে সিন্ডিকেট ভেঙে সবার জন্য উপযোগী দাম নির্ধারণের দাবিও জানান তিনি।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের উৎপাদনের তথ্য বলছে, ২০১০ সালে দেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ৬০০ কোটি পিস, যা এখন ১ হাজার ৭৩৬ কোটিতে পৌঁছেছে। অর্থাৎ এক দশকে উৎপাদন প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। দেশে প্রতিদিন মুরগি, হাঁস, কবুতর ও কোয়েলের প্রায় পৌনে পাঁচ কোটি ডিম উৎপাদন হয়। পৃথক হিসাবে, কেবল মুরগির ডিম উৎপাদন হয় সাড়ে তিন থেকে চার কোটি। হাঁসের ডিমের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
ভাষা পরিবর্তন করুন »